কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের প্রভাবশালী যুগ্ম আহবায়ক আতিকুর রহমান পুলিশের গুলিতে আহত। গত ৭ ডিসেম্বর রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে ছাত্রদলের শান্তিপূর্ণ অবস্থান কর্মসূচিতে হঠাৎ পুলিশের অতর্কিত হামলায় তিনি গুরুতর আহত হোন।
এই বিষয়ে জানতে চাইলে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের সাবেক ১নং সহ সভাপতি মোহাম্মদ গিয়াসউদ্দিন জানান, আগামী ১০ ডিসেম্বর বিএনপির ঢাকা বিভাগীয় সমাবেশকে সফল করার লক্ষ্যে আতিকুর রহমান ১০ দিন আগেই ঢাকা চলে যান। প্রতিদিন বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে শান্তিপূর্ণ লিফলেট বিতরণ ও অবস্থান কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করছিলেন। গত ৭ ডিসেম্বর সারাদেশ থেকে হাজার হাজার নেতাকর্মী বিএনপির কার্যালয়ের সামনে এসে উপস্থিত হচ্ছিল। দুপুর ২ টার পরে পুলিশ অতর্কিত হামলা চালালে আতিক গুলিবিদ্ধ হয়। পরে রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়ে এখন বাসায় অবস্থান করছেন।
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের যুগ্ম আহবায়ক আতিকুর রহমান বলেন, সকাল ১১ টার দিকে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে যায়। দুপুর ১ টার দিকে চা পান করার জন্য পাশের দোকানে গেলে অসংখ্য পুলিশ ভ্যান ও সাঁজোয়া যান দেখতে পায়। অল্প কিছুক্ষণের মধ্যে শত শত পুলিশ এসে জড়ো হতে থাকে। দুপুরের খাবারের জন্য কার্যালয়ের ভিতরে প্রবেশ করলে নিচে থেকে চিৎকার শুনে নেমে আসি। পুলিশ মুহুর্মুহু গুলি, টিয়ারশ্যাল ও সাউন্ড গ্রেনেড ছুড়ছিল। এরই মধ্যে কিছু রাবার বুলেট আমার বুকে ও ঘাড়ে লাগে। আমরা সবাই পিছু হটে যায়।
অতঃপর হোটেল ভিক্টরির গলিতে আমি সহ, ছাত্রদল কেন্দ্রীয় সংসদের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক খন্দকার আল আশরাফ মামুন, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের সাংগঠনিক সম্পাদক শামসুল আরেফিন, তেজগাঁও কলেজ ছাত্রদলের সভাপতি ফয়সাল সহ ৩০-৩৫ জন অবস্থান নিই। যখন পুলিশ কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের ভিতরে প্রবেশ করার চেষ্টা করছে খবর পাই। আমরা সাথে সাথে মামুন ভাইয়ের নেতৃত্বে প্রতিরোধ গড়ে তোলার চেষ্টা করি। পুলিশের মুহুর্মুহু গুলির কারণে আমরা ঠিকতে পারিনি। পিছু হটে আসলে অনুভব করি কপাল ও কান দিয়ে রক্ত বেয়ে পড়ছে। খন্দকার আল আশরাফ মামুন ভাই আমাকে চিকিৎসার জন্য চলে যেতে বলে। পথিমধ্যে ছাত্রদল কেন্দ্রীয় সংসদের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সজিব মজুমদার ভাই আমাকে ফার্মেসি থেকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে হাসপাতালে পাঠিয়ে দেন।
কতগুলো গুলিবিদ্ধ হয়েছেন জিজ্ঞাসা করলে তিনি বলেন, কপালে, কানে, ঘাড়ে, হাতে, বুকে, পিঠে, আঙ্গুলে গুলি লেগেছে অল্প। কিন্তু দুই উরু ও পাছায় শতাধিক স্প্রিন্টার লেগেছে। যেগুলো উত্তরার একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়ে বের করেন।
ঢাকা বিভাগীয় সমাবেশের কথা জিজ্ঞাসা করলে আতিকুর রহমান বলেন, এখন শরীরে জ্বর আছে। তারপরও আগামী ১০ ডিসেম্বরের সমাবেশে উপস্থিত থাকবো। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান, আগামীর রাষ্ট্রনায়ক জনাব তারেক রহমান যে আন্দোলনের ডাক দিয়েছেন, এই আন্দোলনে প্রয়োজনে জীবন দিয়ে হলেও গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করে যাব। দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্ত করেই ঘরে ফিরব ইনশাআল্লাহ।